1. admin@englishbangla24.com : admin :
মোহাম্মদ জমির উদ্দিন এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত;- English Bangla 24
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

মোহাম্মদ জমির উদ্দিন এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত;-

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১২০ Time View

 

মোহাম্মদ জমির উদ্দিন
জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ খ্রিঃ
পিতা মরহুম দবির উদ্দিন,মাতা মরহুমা তফি বেওয়া
জন্মস্থান ঠিকানা:- গ্রাম রত্নাই স্কুলহাট, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও। বর্তমান ঠিকানা :- মহল্লা ইসলামবাগ, হোল্ডিং ২৯৭, ওয়ার্ড নং ৩, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা, ঠাকুরগাঁও।

পারিবারিক জীবন বৃত্তান্ত:-
আমি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের একজন সদস্য। আমার মরহুম পিতা একজন আদর্শ কৃষক এবং তৎকালীন সময়ে দ্বীর্ঘদিন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমার মরহুমা মা একজন আদর্শ গৃহীনি ছিলেন।
আমরা চার ভাই এক বোন। বড় ভাই মোঃ গাজিউর রহমান বিবাহিত ও কৃষিজীবী, দ্বিতীয় আমি মোহাম্মদ জমির উদ্দিন বিবাহিত ও চাকরিজীবী, তৃতীয় মোঃ নসিব উদ্দিন বিবাহিত ও কৃষিজীবী, চতুর্থ মোঃ দারাজুল ইসলাম বিবাহিত ও কৃষিজীবী এবং পঞ্চম মোছাঃ ইসা খাতুন বিবাহিত ও গৃহীনি। ভাই বোনেরা প্রত্যেকেই পৃথক পৃথকভাবে যার যার মত নিজ নিজ ঘর সংসার পরিচালনা করে আসছেন।

সংক্ষিপ্ত ব্যক্তিগত জীবন বৃত্তান্ত:-
আমি মোহাম্মদ জমির উদ্দিন ২ এপ্রিল ১৯৯৩ খ্রিঃ তারিখ ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলাধীন করনাইট গ্রামের আব্দুল মালেকের কন্যা মোছাঃ আফরোজা আক্তার পারুল এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমি দুই সন্তানের জনক। প্রথম সন্তান সাকী আল জাঈম পুস্প, জন্ম ২৫ ডিসেম্বর ১৯৯৪ খ্রিঃ এবং দ্বিতীয় সন্তান জাকী আল নাঈম জিহান জন্ম ১৭ এপ্রিল ২০০০ খ্রিঃ।

সংক্ষিপ্ত শিক্ষা জীবন বৃত্তান্ত:-
রত্নাই বগুলাবাড়ী প্রাইমারী স্কুল ১৯৭১-১৯৭৫ খ্রি.
রত্নাই বগুলাবাড়ী জুনিয়র হাইস্কুল ১৯৭৬-১৯৭৮খ্রি.
কালমেঘ আর আলী হাইস্কুল ১৯৭৯-১৯৮০ খ্রি.
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ ১৯৮১-১৯৮৬খ্রি.

সংক্ষিপ্ত চাকরি জীবন বৃত্তান্ত:-
পুলিশ একাডেমি সারদায় ক্যাডেট এসআই হিসেবে
এক বছর বাস্তব প্রশিক্ষণ: ১১ জানুয়ারি ১৯৮৮ খ্রিঃ
সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ: ২৮ জানুয়ারি ১৯৮৯ খ্রিঃ
ইন্সপেক্টর অব পুলিশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ খ্রিঃ
সহকারী পুলিশ সুপার: ১৬ জুলাই ২০১৬ খ্রিঃ
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার: ১৬ অক্টোবর ২০২২ খ্রিঃ
চাকরি হতে অবসর গ্রহণ ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ

সংক্ষিপ্ত জন্মস্থান বৃত্তান্ত:-
আমার জন্মস্থান এমন এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও নিভৃত গ্রামে যেখানে না ছিল নূন্যতম স্বাভাবিক জীবন
যাত্রার ব্যবস্হা, না ছিল তেমন কোন পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা, না ছিল ব্যবসা বানিজ্যের জন্য কোন বাজারঘাটা, না ছিল চলাচলের রাস্তাঘাট, না ছিল চিকিৎসা সেবার সুযোগ সুবিধা, না ছিল বিদ্যুৎ সংযোগ, এটি ছিল বাংলাদেশের ভারত সীমান্তবর্তী তৎকালীন দিনাজপুর জেলাধীন (বর্তমান ঠাকুরগাঁও জেলা) বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিভৃত গ্রাম, বছরের আশ্বিন কার্তিক মাস এলেই দেখা দিত খাদ্যের টানাপোড়েন, পড়াশোনার ছিল না তেমন কোন পরিবেশ, জরাজীর্ণ ছিল স্কুল ঘর, স্কুল ঘরের মেঝেতে বসে পড়াশোনার হাতেখড়ি, প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে ক্লাশ ওয়ান হতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া সম্পন্ন করি। অতঃপর জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অবস্থিত কালমেঘ আর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন পরিবেশে পড়াশোনা শুরু করি।

প্রতিকূল পরিবেশে নিজ মাতৃভূমিতে ক্লাশ ওয়ান হতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করাকালে সুযোগ হলেই পরিবার’কে দিনে কৃষি কাজে সহায়তা, রাত্রি বেলা হারিকেন/কুপি বাতির আলোতে পড়াশোনা, জরাজীর্ণ স্কুলের আঙ্গিনায়/বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি বেঞ্চে বসে ক্লাশ, ভ্যান/গরুগাড়ি/পায়ে হেঁটে দূরবর্তী বাজার ঘাট, আশ্বিন কার্তিক মাস এলেই আউস ধানের মোটা চালের ভাত,মারুয়া আটার রুটি, কাউনের ভাত, চমুক কচুর সিদ্ধ মুড়া,জ৺ এর ছাতু,ঠাকরি/চেপটি কলাইয়ের ডাল প্রভৃতি খাবারের উপর নির্ভর করতে হতো। যদিও সে সময়ে ছিল পর্যাপ্ত আবাদি জায়গা জমি এবং আবাদ করার জন্য ছিল পর্যাপ্ত লোকবল কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের অভাবে আবাদি জমিতে উৎপাদিত হতো হতো না কাঙ্খিত ফসল ফসলাদি । স্বাস্থ্য সেবা বলতে অসুখবিসুখে গ্রাম্য ডাক্তার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সিড়াপ, জেলা শহরে হয়তো দুএকজন পাশ করা ডাক্তার থাকতো, কিন্তু যোগাযোগের অভাবে সেখান থেকে অত্র অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা নেয়া ছিল কল্পনাতীত। মূলত এভাবেই কেটেছে শৈশবকাল নিজ মাতৃভূমিতে কিন্তু সেই কৈশোর বয়সে কোন বাঁধায় আমাকে আমার ইচ্ছা ও মনোবাসনার বিরুদ্ধে আমার জন্মস্থান তৎকালীন দিনাজপুর জেলাধীন বালিয়াডাঙ্গী থানার অন্তর্গত নিভৃত পল্লী অঞ্চল রত্নাই স্কুলহাটে আটকে রাখতে পারেনি।

সেই কৈশোর বয়সে এরূপ নিভৃত পরিবেশ হতে বের হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার প্রত্যয় নিয়ে নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রয়োগ, কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় ঘটিয়ে তৎকালে ৭ নং আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের সেক্রেটারি জনাব মোঃ মোতলেবুর রহমান এর সহায়তা নিয়ে সেই কৈশোর বয়সে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে কালমেঘ আর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই এবং পাশে জনৈক আব্দুল গফুর নামক এক ভদ্র লোকের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থেকে শুরু করি পরবর্তী ধাপের পড়াশোনা। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঠাকুরগাঁও কলেজে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই এবং একই প্রক্রিয়ায় বালিয়াডাঙ্গী দুওসুও এলাকার পল্লি চিকিৎসক জনাব মোঃ ওয়াজেদ আলীর সহায়তা নিয়ে তার শ্বশুর জনাব মোঃ মনির উদ্দিন মহোদয়ের বাড়িতে লজিং মাষ্টার হিসেবে থেকে কলেজে পড়াশোনা আরম্ভ করি। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের আর্থিক চাহিদা যোগানের লক্ষ্যে ঠাকুরগাঁও রোডের পাশ্বে একটি দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করি।১৯৮৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে ডিগ্রী বানিজ্য বিভাগে ভর্তি হই এবং ঠাকুরগাঁও শহরে সরকার পারায় মাঝে পাকা একটি টিন সেড ঘর ভাড়া নিয়ে পড়াশোনা চলমান রাখি।

ডিগ্রী ফাইনাল পরীক্ষা কাছাকাছি এলে মাদ্রাসার শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে দিয়ে পূর্ণোদ্যমে ডিগ্রী পরীক্ষা পড়ায় মনোনিবেশ করি এবং পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে ডিগ্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ডিগ্রী পরীক্ষা শেষে অবসর সময়ে বাংলাদেশ খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানকারী কম্পানি পেট্রোবাংলাতে চুক্তি ভিত্তিক চাকরি শুরু করি এবং সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত ইন্টারভিউ বোর্ডে অংশগ্রহণ করতে থাকি। দ্বীর্ঘদিন পর ডিগ্রী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে আমি প্রথমবারেই ডিগ্রী পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হই ( যদিও সেবার ডিগ্রী পরীক্ষার পাশের হার ছিল মাত্র ১৪ পার্সেন্ট)। ডিগ্রী পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে আমি সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন বিভাগে ইন্টারভিউতে আরো বেশি বেশি অংশগ্রহণ করতে থাকি। অতঃপর একসময় আমি আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হই অর্থাৎ এসআই পদে নিয়োগ লাভ করি। যদিও পুলিশের চাকরিটা আমার জন্য ছিল এক ধরনের বড় চ্যালেঞ্জের। কারণ পুলিশের চাকরি সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র কোন ধারণা ছিল না। ফলে নিজস্ব বুদ্ধি বিবেক খাটিয়ে ধৈর্য সহকারে কর্মজীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে। যাহোক এরপর আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

উল্লেখ্য আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা,প্রবল ইচ্ছাশক্তি, নিরলস পরিশ্রম, চরম ধৈর্য ধারণ, পরিচিতজনদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন, স্বচ্ছতার সঙ্গে কর্ম সম্পাদন, নিপীড়িত জনগণকে আইনি পরামর্শ দান, অন্যায় ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখা, গণমানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন, সর্বোপরি নিকট আত্মীয় স্বজনসহ সর্বস্তরের মানুষের দোয়া এবং মহান আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে আমি আজ এ পর্যায়ে উপনীত হতে সক্ষম হয়েছি

সংক্ষিপ্ত শিক্ষা জীবন বৃত্তান্ত:-
১৯৭০ সালে রত্নাই বগুলাবাড়ী প্রাইমারী স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করি। ১৯৭৪ সালে পঞ্চম শ্রেণী পাস করে ১৯৭৫ সালে রত্নাই বগুলাবাড়ী জুনিয়র হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হই এবং ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়ণকালে বিদ্যালয়ের গেম ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হই। ১৯৭৬ সালে সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়ণকালে বিদ্যালয়ের জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হই এবং পরবর্তী বছর ১৯৭৭ সালে উক্ত বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমন্ডলী ও সহপাঠীদের অনুরোধে পুনরায় আলোচ্য বিদ্যালয়ের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করি। ১৯৭৮ সালে রত্নাই বগুলাবাড়ী জুনিয়র হাইস্কুল হতে ৮ম শ্রেনী কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করি।

আমি ১৯৭৮ সালে কালমেঘ আর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হই এবং স্কুলের পাশে এক বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থেকে পড়াশোনা আরম্ভ করি। ছাত্র জীবনের প্রথম থেকেই খেলাধুলার প্রতি আমার টান ছিল বেশি। বিশেষ করে ভলিবল ও ফুটবল খেলার প্রতি। আমি বিভিন্ন খেলাধুলায় পারদর্শিতা প্রদর্শন করাই স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্রিড়াঙ্গনের সহপাঠীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হই এবং নবম শ্রেণীতে অধ্যয়ণকালে উক্ত বিদ্যালয়ের গেম ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হই। ১৯৭৯ সালে নবম শ্রেণী পাস করে দশম শ্রেণীতে ভর্তি হই এবং নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোটের ব্যবধানে প্রতিদন্ডি প্রার্থীকে পরাজিত করে আমি বিদ্যালয়ের জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হই এবং পরের বছর ১৯৮০ সালে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিদ্যালয়ের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করি।

১৯৮১ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে একই বছরে ঠাকুরগাঁও কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসিতে ভর্তি হই এবং মথুরাপুর এলাকায় এক বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থেকে কলেজ জীবনের পড়াশোনা আরম্ভ করি। ১৯৮৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে একই বছরে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে ডিগ্রীতে বানিজ্য বিভাগে ভর্তি হই।সেসন জোটের কারণে ১৯৮৬ সালে ডিগ্রী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং উক্ত ডিগ্রী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয় ১৯৮৭ সালে। আমি প্রথম বারেই কৃতিত্বের সঙ্গে ডিগ্রী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ লাভ করি। যদিও সেবার ডিগ্রী পরীক্ষার পাশের হার ছিল মাত্র ১৪ পার্সেন্ট।

অতঃপর আমি সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত ইন্টারভিউ দেয়ার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মাস্টার্সে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি কিন্তু এরইমধ্যে কয়েক দিনের ব্যবধানে আমি পুলিশ বিভাগসহ বন বিভাগে ফরেস্টার পদে ও পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার পদে চাকরির নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হই। ফলে পুলিশ বিভাগের মতো একটি ব্যস্ততম বিভাগে চাকরিতে যোগদানের কারণে মাস্টার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমার জীবনে বড় ধরনের অপ্রাপ্তির ও কষ্টের জায়গা এটিই।

ছাত্র সংগঠন সংক্রান্ত বৃত্তান্ত:-
মানুষ জন্মসূত্রে বা সামাজে চলতে গিয়ে মনের অজান্তে কোন না কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি বা সংগঠনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে অথবা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। স্কুল জীবন পর্যন্ত আমি কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়িনি তবে কলেজ জীবনে গিয়ে হঠাৎ করেই বাম ঘরানার একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি। মাঝে মধ্যে সেই ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে ঠাকুরগাঁও কলেজ প্রাঙ্গণে মিছিল মিটিং এ অংশগ্রহণ করি। একসময় ঠাকুরগাঁও কলেজের পরীক্ষা হলে সিনিয়র ভাইদের সাথে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদে সর্বদলীয় ছাত্র সংগঠনের মিছিলে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আমরা কয়েকজন ছাত্র পুলিশের নিকট আটকা পড়ি। অবশ্য কলেজ শিক্ষক ও সিনিয়র ভাইদের হস্তক্ষেপে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সবাই পুলিশের নিকট থেকে মুক্তি লাভ করি। একবার আলোচ্য ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে আমরা কয়েকজন সংগঠনের জাতীয় কাউন্সিলে যোগদানের জন্য ঢাকা যায়। কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনের প্রাক্কালে সংগঠনের পদ পদবী নিয়ে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী হতে আগত নেতাদের মধ্যে শুরু হয় প্রচন্ড রকম ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এরূপ অপ্রীতিকর ঘটনা দেখে আমরা ঠাকুরগাঁও কলেজের সকল ছাত্র একযোগে বেড় হয়ে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করি এবং পরদিন আমরা সবাই নিরাপদে ঠাকুরগাঁও ফেরত আসি। ঠাকুরগাঁও কলেজে অধ্যয়ন কালে এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা আমি প্রত্যক্ষ করেছি। যা আমার কাছে ভালো লাগেনি।যার কারণে আমি প্রথম থেকেই ছাত্র সংগঠনের কোন পদ পদবীতে আগ্রহী ছিলাম না। উল্লেখ্য আমি আলোচ্য ছাত্র সংগঠনের কোন পদ পদবীতে ছিলাম না। তবে উক্ত ছাত্র সংগঠনের প্রায় সকল পর্যায়ের নেতানেত্রীদের সংগে আমার একটা ভালো সখ্যতা ছিল, এটুকুই।

আমি মোহাম্মদ জমির উদ্দিন ঠাকুরগাঁও কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও রোড হরিহরপুর দাখিল মাদ্রাসার গনিতের শিক্ষক হিসেবে পারটাইম জব করি। বছর তিনেক উক্ত মাদ্রাসায় জব করার পর ডিগ্রী পরীক্ষার প্রাক্কালে মাদ্রাসার জব ছেড়ে দেই এবং ডিগ্রী পরীক্ষার জন্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকি। অতঃপর ডিগ্রী পরীক্ষা দেয়ার পরপরই বাংলাদেশ খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানী কম্পানি পেট্রোবাংলাতে চুক্তি ভিত্তিক শুরু করি। এসময় উক্ত কম্পানিতে প্রায় ৫/৭ শত শ্রমিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ কম্পানির একজন সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে কতৃপক্ষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হই। খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানী কম্পানির কতৃপক্ষ আমার কর্মে সন্তুষ্টি লাভ করে আমাকে উক্ত কম্পানির গ্রুপ লিডার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। এভাবে আমি কম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন স্থানে খনিজ পদার্থ অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পন্ন করি।

সপ্তাহ খানেক বিরতির পর পেট্রোবাংলা কতৃপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানের লক্ষে ঠাকুরগাঁও জেলা হতে আমাকে চট্টগ্রাম জেলার পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য আমন্ত্রণ জানালে আমি উক্ত আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রামে পেট্রোবাংলা অফিসে গিয়ে রিপোর্ট করি এবং সেখান হতে আমি ও অপর একজন বাংলাদেশী কর্মচারী পেট্রোলিয়াম কম্পানির দুজন ফরেনার্স (একজন জাপানি ও একজন আমেরিকান) এর সাথে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই এলাকায় খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানের কাজ আরম্ভ করি। একই সঙ্গে সময় ও সুযোগ বুঝে সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে থাকি। ফরেনার্সদের সঙ্গে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে কাজ করার ফলে তাদের সঙ্গে একপ্রকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। অপর দিকে খনিজ পদার্থ অনুসন্ধানে কিছুটা অভিজ্ঞতা লাভ করায় পেট্রোবাংলা কতৃপক্ষ আমাকে পেট্রোলিয়াম কম্পানির মাধ্যমে জাপানে গিয়ে পেট্রোলিয়াম বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণের জন্য প্রস্তাব করেন। উক্ত প্রস্তাব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করাকালে ইতোমধ্যে আমর নামে সপ্তাহ খানেক এর ব্যবধানে পুলিশ বিভাগের এসআই,বন বিভাগের ফরেস্টার ও পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার পদে নিয়োগ সংক্রান্ত এপোয়ন্টমেন্ট কার্ড আমার বাড়ির ঠিকানায় গৃহীত হয়। সংবাদ পেয়ে আমি পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে দ্রুত নিজ বাড়ি ফিরে এসে নিকট আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ বিভাগের এসআই পদে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

সংক্ষিপ্ত চাকরির জীবন বৃত্তান্ত:-
স্মারক নং আরএণ্ডএম/২৮১-৮৭/২৬ তারিখ ৮ জানুয়ারি ১৯৮৮ খ্রিঃ মূলে ১১ জানুয়ারি ১৯৮৮ খ্রিঃ তারিখ আউট সাইড ক্যাডেট এসআই (নিরস্ত্র) হিসেবে পুলিশ একাডেমি সারদায় যোগদান পূর্বক এক বছরের বাস্তব প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করি।
পুলিশ একাডেমি সারদায় দীর্ঘ এক বছর ট্রেনিং শেষে ১১ জানুয়ারি ১৯৮৯ খ্রিঃ তারিখ লালমনিরহাট জেলায় যোগদান করি। অতঃপর ২৮ জানুয়ারি ১৯৮৯ খ্রিঃ তারিখ শিক্ষানবিশ সাব-ইন্সপেক্টর(নিরস্ত্র) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জেলাতে দুই বছর বাস্তব প্রশিক্ষণ লাভ করে ১৯৯১ সালে এসআই (নিরস্ত্র) হিসেবে লালমনিরহাট সদর থানায় যোগদান করে কর্মজীবন শুরু করে ১৯৯৪ সালের মে মাস পর্যন্ত উক্ত জেলায় সুনামের সঙ্গে চাকরি করি। কর্মজীবনের অংশ হিসেবে ১৯৯৪ সালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার ঢাকা, ১৯৯৫-১৯৯৭ সালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা,১৯৯৭- ১৯৯৮ সালে পাবনা জেলা এবং ১৯৯৯-২০০৬ সালে দিনাজপুর জেলায় চাকরি করি।

০৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দিনাজপুর জেলার বিরল থানা, ২০০৬ সালে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পঞ্চগড় বোদা থানা,২০০৭-২০১১ সালে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পঞ্চগড় সদর থানা, ২০১১-২০১৪ সালে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে লালমনিরহাট সদর থানা, ২০১৪-২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানা, ২০১৫-২০১৬ সালে অফিসার ইনচার্জ হিসেবে কুড়িগ্রাম সদর থানায় দায়িত্ব পালন করি।

১৬ জুলাই ২০১৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি লাভ করে বগুড়া জেলায় ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, ২০১৭ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে নীলফামারী জেলার ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, ২০১৮ সালে নবগঠিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কোতয়ালী জোন, ২০২০ সালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ট্রাফিক উত্তর,২০২২ সালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ট্রাফিক দক্ষিণ হিসেবে দায়িত্ব পালন করি।
সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কোতয়ালী জোনের দায়িত্ব গ্রহণ করে পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে নবগঠিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী জোন এবং কোতয়ালী জোনাধীন কোতয়ালী থানা ও তাজহাট থানা দুটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সক্ষম হই।

১৬ অক্টোবর ২০২২ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (Additional SP ) পদে পদোন্নতি লাভ করি এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুর হিসেবে এক মাসের অধিক সময় কাজ করি। অতঃপর ২৩ নভেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ বদলী সূত্রে আরআরএফ রংপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করি এবং সুনামের সাথে চাকরি জীবন সমাপ্ত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (Additional SP) হিসেবে ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ বাংলাদেশ পুলিশ, রংপুর রেঞ্জ, রংপুর হতে পিআরএল (post retirement leave) গ্রহণ করি।

চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা:-
১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে প্রবেশ করে এক বছর সারদা একাডেমীতে বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষানবিশ এসআই হিসেবে লালমনিরহাট জেলায় যোগদান করি। পুলিশ সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকায় এবং পুলিশ বাহিনীতে আমার কোন পরিচিতজন না থাকায় প্রথম থেকেই আমি পুলিশের চাকরিতে অস্বস্তিতে ছিলাম পুলিশের কাজকর্মকে মানিয়ে নিতে নানারকম দিধাদন্ডে ভুগতাম। এরমধ্যদিয়ে সকলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পুলিশের দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনায় সতর্কতার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখি। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই অন্যের সৃষ্ট ভুল ক্রটির দায় অন্যায়ভাবে আমার উপর চাপিয়ে দেয়া হয় এবং এ কারণে চাকরির প্রথম দিকেই আমাকে বড় ধরনের দুটি ধাক্কার সম্মুখিন হতে হয়। পুলিশের চাকরি সম্পর্কে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই এধরনের ধাক্কা আমাকে কিছুটা হতাশার মধ্যে ফেলে দেয়। এর পরেও আমি ধৈর্য সহকারে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি। এভাবে পাঁচ-ছয় বছর অতিবাহিত হবার পর আমি পুলিশের চাকরিকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হই। কিন্তু চাকরি জীবনের শুরুতেই আমার প্রতি পুলিশ বিভাগের এহেন অন্যায় আচরণের বিষয়টি আমি এ পর্যন্ত ভুলতে পারিনি। যাহোক চাকরির পরবর্তী সময়টা আমি খুবই সতর্কতার সাথে পেশাদারিত্ব সাথে কর্মজীবন অতিক্রান্ত করতে সক্ষম হই। উল্লেখ্য আমি আমার চাকরি কালীন সময়ে নিজেকে কখনো চাকরিজীবী হিসেবে সীমাবদ্ধ না রেখে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। আমি আমার চাকরি কালীন সময়ে সর্বদা রাষ্ট্রের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। চাকরি জীবনে আমি চাকরির সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সাথে জনগণের সেবা দানে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। চাকরি জীবনে কর্মক্ষেত্রে দেশ ও জাতির কল্যাণে আমি বেশ কিছু ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় পুলিশ বিভাগ হতে আমাকে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এজন্য আমি বাংলাদেশ সরকার তথা পুলিশ বিভাগের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। চাকরি জীবনে আমি আইনের কাঠামোতে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে শতভাগ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার চেষ্টা করেছি।

সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড:-(১)
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” প্রতিষ্ঠা:-
আমি মোহাম্মদ জমির উদ্দিন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী জোনের দায়িত্ব পালনকালে পেশাদার, সামাজিক, মানবিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন সর্বোপরি সৃষ্টিশীল পুলিশ কর্মকর্তা জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম পুলিশ কমিশনার রংপুর মহোদয় আমাকে তাঁর অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার দরিদ্র পীড়িত জনগোষ্ঠির পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তৈরির পরামর্শ প্রদানপূর্বক বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করেন। এ ধরণের একটি মহতী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠাকরণের প্রস্তাবনা পেয়ে আমি দীর্ঘ তিন মাসের অধিক সময় ধরে আলোচ্য বিষয় নিয়ে মেট্রোপলিটন এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী ও সুধীজনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করি এবং আলোচ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠনের পক্ষে তাদের মূল্যবান মতামত গ্রহণের স্বপক্ষে বিরামহীন ভাবে কাজ করতে থাকি। একটি পর্যায়ে এসে আলোচ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠার স্বপক্ষে মেট্রোপলিটন এলাকার হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সদস্যবৃন্দ আগ্রহ প্রকাশ করলে এবিষয়ে পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে অবহিত করি। এরপর পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে একটি বিশেষ দিনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হলরুমে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর মেট্রোপলিটন কমিউনিটি পুলিশ ও বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর শাখার সদস্যবৃন্দের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করি। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হলরুমে আমন্ত্রিত সদস্যবৃন্দ উপস্থিত হলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সেই কাঙ্খিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠনের জন্য আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় সভা। সভায় উপস্থিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর মেট্রোপলিটন কমিউনিটি পুলিশ ও বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর শাখার সদস্যবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা,পর্যালোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে শুরু হয় আলোচ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া । অতঃপর উপস্থিত সদস্যবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর মেট্রোপলিটন কমিউনিটি পুলিশ এবং বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর শাখার সদস্যবৃন্দের সমন্বয় গঠন করা হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর”।
গঠিত একুশ সদস্য বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুর মহোদয়। আমার উপর অর্পিত হয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি’র দায়িত্ব এবং জনাব আব্দুল মজিদ খোকন সাহেব এর উপর অর্পণ করা হয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব।

অতঃপর মানবতার বন্ধুনে রংপুর সংগঠনের জন্য গঠিত ২১ (একুশ) সদস্য বিশিষ্ট নতুন কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দের সঙ্গে সংগঠনের আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা ও পর্যালোচনা অন্তে ৮ মে ২০১৯ খ্রিঃ তারিখ দ্বিতীয় রমজানে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুর মহোদয়ের সভাপতিত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মাননীয় মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি এমপি মহোদয়কে দিয়ে নবগঠিত সংগঠন মানবতার বন্ধুনে রংপুর এর আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের শুরু থেকে প্রতিনিয়ত হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কর্তৃক সরবরাহকৃত একশত/দেড়শতাধিক রান্না করা খাবার প্যাকেট মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন এতিমখানা, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গন, রংপুর রেলওয়ে স্টেশন, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, গুচ্ছ গ্রাম, ফুটপাত অবস্থানকারী ভাসমান জনগোষ্ঠির মাঝে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করি। একই সঙ্গে সংগঠনের ব্যানারে মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ফ্রি-মেডিক্যালের স্বাস্ত সেবা প্রদান, পরিবেশ রক্ষার্থে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ফলজ,বনজ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে দরিদ্র পীড়িত এলাকায় টিউবওয়েল বিতরণ, শীত মৌসুমে এলাকার দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন, করোনা মহামারীর সময় সাধারণ জনগণকে সচেতন করনের লক্ষ্যে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় সচেতনতামূলক লিফলেট, মাস্ক ও হ্যান্ড সেনেটারী বিতরণ, করোনা মহামারীর কালে কর্মহীন হয়ে পড়া হোটেল রেস্তোরাঁ শ্রমিকদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ সহ বহুবিধ জনসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকি। সংগঠনের এহেন জনহিতকর কার্যক্রম এলাকায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সামাজিক ও গণমাধ্যম প্রচার ও প্রসার লাভ করে।তার ফলশ্রুতিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে সংগঠনটি রেজিস্ট্রেশন লাভ করতে সক্ষম হয়। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” সংগঠনটি উত্তরাঞ্চলে শ্রেষ্ঠ মডেল সংগঠন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। উল্লেখ্য মানবতার বন্ধুনে রংপুর সংগঠনটিকে টেঁকসই করণের লক্ষ্যে পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের পরামর্শক্রমে দীর্ঘ তিন মাস ধরে নিরলস পরিশ্রম করে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিধিবিধান অনুসরণ করে সংগঠনের জন্য প্রণয়ন করি একটি স্বতন্ত্র গঠনতন্ত্র।যা ইতোমধ্যে সমাজ কল্যাণ দপ্তর থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে। অর্থাৎ মানবতার বন্ধুনে রংপুর সংগঠনের জন্য রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্র। প্রণীত গঠনতন্ত্রের আলোকে গঠন করা হয়েছে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো। প্রকাশ করা আবশ্যক যে, রংপুর জেলা প্রশাসন হতে লিজ প্রাপ্ত ৫ শতাংশ জায়গার উপর নির্মাণ করা হয়েছে সংগঠনের স্হায়ী ভবন।এ ভবন থেকেই এখন পরিচালিত হচ্ছে অফিসের সামগ্রীক কার্যক্রম।

৬ মার্চ ২০২১ সালে সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সংগঠনের শতাধিক আজীবন সদস্যসহ দু’শতাধিক সাধারণ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের মধ্য থেকে বহুবিধ প্রস্তাবনাসহ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব এলে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয় এবং পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুর মহোদয় এর উদ্যোগে এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সহায়তা নিয়ে মেট্রোপলিটন এলাকার তাজহাট থানাধীন দর্শনা নামক স্থানে ৩২ শতাংশ জায়গার উপর ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২ তলার কাজ সম্পন্ন করে “মানবতার বন্ধুনে রংপুর এতিমখানা ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স” এবং হারাগাছ থানাধীন মদামুদন নামক স্থানে ৩১ শতাংশ জায়গার উপর ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২ চলার কাজ সম্পন্ন করে “মানবতার বন্ধুনে রংপুর এতিমখানা ও হেফ্জখানা” প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। উক্ত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি ইতোমধ্যে পুর্ণাঙ্গভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে এবং ২০২২ খ্রিঃ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি ইতোমধ্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে রেজিস্ট্রেশন লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। গঠনতন্ত্রের আলোকে রয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটির পৃথকভাবে দুটি সাংগঠনিক কাঠামো। উল্লেখ্য মানবতার বন্ধুনে রংপুর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ আব্দুল মজিদ খোকন ইতোমধ্যে পরলোকগমন করেন। ফলে হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি রংপুর শাখার নতুন সাধারণ সম্পাদক জনাব শাহ মোঃ শাহিদ আখতার সোহেলকে “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। আর চাকরি হতে অবসর গ্রহণে যাবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য আমাকে অনুরোধ করা হলে আমি সভার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দায়িত্ব পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করি। অতঃপর সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশনাক্রমে ১০ জুন ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)/২০২৩ দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করি। বার্ষিক সাধারণ সভায় আমার স্বাগতিক বক্তব্যে উপস্থিত সকল সদস্যকে স্বাগত জানিয়ে আমার অবসর গ্রহণের বিষয়টি সকলকে অবহিত করি এবং জানাই আমি অবসর জনিত কারণে নিজ জেলা ঠাকুরগাঁও এ বসবাস করছি । একারণে আমার প্রাণের সংগঠন মানবতার বন্ধুনে রংপুর এর সার্বিক উন্নয়নে আমার সময় দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বর্ণিত কারণে উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আমার সভাপতি’র দায়িত্বভার অর্পণের বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করি। বার্ষিক সাধারণ সভা(এজিএম) আমার প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে বিবেচনায় নেন এবং সংগঠনের সভাপতি’র দায়িত্ব রংপুর মহানগর এলাকার নিবাসী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা জনাব মোঃ আতোয়ার রহমান সরকার এর উপর অর্পণ করা হলে তিনি মানবতার বন্ধুনে রংপুর সংগঠনের সভাপতি’র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য আলোচ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবতার বন্ধুনে রংপুর ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমি অসামান্য অবদান রাখায় তার স্বীকৃত স্বরূপ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) উপস্থিত সদস্যগণের আলোচনা, পর্যালোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে আজীবন প্রতিষ্ঠিত “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” সংগঠন ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির উপদেষ্টা পরিষদের ১ নং সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন। বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আমার সভাপতির পদ ছাড়ার প্রস্তাব গ্রহন করে আমাকে আজীবন উপদেষ্টা পরিষদের ১ নং সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছেন এজন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।

প্রকাশ থাকে যে,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর”কে বর্তমান অবস্থায় উন্নীতকরণসহ এ সংগঠনের ব্যানারে রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার দু’প্রান্তে দু’টি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “মানবতার বন্ধুনে এতিমখানা ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স” (দর্শনা,তাজহাট থানা) এবং “মানবতার বন্ধুনে এতিমখানা ও হেফজ্খানা” (মদামূদন,হারাগাছ থানা) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমি কমিটি’র সদস্যবৃন্দকে নিয়ে সততা ও স্বচ্ছতা সাথে প্রবল ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে নিরলস পরিশ্রম ও অসীম ধৈর্য ধরে কর্মযোগ্য পরিচালনান্তে বর্তমান অবস্থায় উন্নীতকরণের চেষ্টা করেছি। মেট্রোপলিটন এলাকাবাসীর মতো আমারও বিশ্বাস, প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবতার বন্ধুনে রংপুর ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২(দু)টি’র সামগ্রীক কার্যক্রম চলমান থাকলে এর সেবা/সুফল রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ ভোগ করবেন। আমি আরো বিশ্বাস করি যে, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা জনাব মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ রংপুর মহোদয়সহ সংগঠনের প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে আমরা যারা এ মহতী উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে নির্মোহভাবে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কাজ করেছি আল্লাহ পাক নিশ্চয় এর প্রতিদান সকল সদস্যেকে দান করবেন।
যা হোক বহু ত্যাগ ও শ্রম দিয়ে নিষ্ঠার সাথে
প্রতিষ্ঠিত করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “মানবতার বন্ধুনে রংপুর” এবং দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির উত্তরোত্তর উন্নতি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।

সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ড:-(২)
দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স” প্রতিষ্ঠা:-
আমি মোহাম্মদ জমির উদ্দিন বাংলাদেশ পুলিশে সরাসরি এসআই (নিরস্ত্র) পদে প্রবেশ করে এসআই হতে পদোন্নতি প্রাপ্ত পরবর্তী ধাপগুলোতে চাকরি জীবন পরিচালনাকালে আমার সামর্থ্যানুযায়ী এলাকার দরিদ্র অসহায় মানুষের আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতাসহ বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে সহায়তা করে এসেছি। এছাড়া আমি আমার পুরোটা চাকরি জীবনে আমার শরনাপন্ন হওয়া এলাকার মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে প্রয়োজনীয় আইনী পরামর্শ প্রদানের চেষ্টা করেছি। আমার কাছে আইনী পরামর্শ নিতে এসে কেউ বিমুখ হয়েছেন, এমন কোন ব্যক্তি এলাকায় রয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমি এলাকার মানুষকে আইনের পরামর্শ দিতে গিয়ে কখনই আপন বা পর হিসেবে দেখিনি। আমি এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে নিজ এলাকাবাসী হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের মঙ্গলের জন্য যতটা করা সম্ভব পুরোটাই করার চেষ্টা করেছি। অনেক সময় আমার আত্মীয় স্বজনসহ এলাকার সাধারণ লোকজন আমার নিকট সরকারি চাকরির জন্য শরনাপন্ন হয়েছেন, কিন্তু আমি যেহেতু কোন নিয়োগকারী কর্মকর্তা ছিলাম না তাই সে বিষয়ে তাদের কোন উপকারে আসতে পারিনি। এছাড়া অনেকে অর্থের বিনিময়ে হলেও সরকারি চাকরি পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে আমার শরনাপন্ন হয়েছেন কিন্তু আমি তাদেরও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোন সহযোগিতা করতে পারিনি। কারণ এ বিষয়ে আমার পরিস্কার বক্তব্য ছিল যে, “আমরা এমন একটি সমাজে বসবাস করি যে সমাজে নিকট আত্মীয় স্বজন বা নগদ অর্থ ছাড়া চাকরি পাইয়ে দেয়া সহজ ব্যাপার নয়, সে সমাজে বসবাস করে মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়া আমার জন্যে ছিল খুবই কঠিন কাজ।” তাছাড়া অর্থের বিনিময়ে চাকরি নেয়া বা চাকরি দেয়ার অনৈতিক প্রক্রিয়াতে আমি কোন ভাবেই নিজেকে জড়াতে চাইনি এবং এ ধরনের অনৈতিক প্রক্রিয়াকে আমি কোন ভাবেই সমর্থন করতে পারিনি। যার কারণে এসকল মানুষের আমি কোন উপকারে আসতে পারিনি। উল্লেখ্য আমি নিজে আমার চাকরি পাবার ক্ষেত্রে কোন অনৈতিক প্রক্রিয়ার আশ্রয় গ্রহণ করিনি। তাই আমার দ্বারা এ ধরনের অনৈতিক কাজে সহায়তা প্রদান করা কোনো ভাবেই সম্ভব হয়নি। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে আগ্রহী প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে শতভাগ চেষ্টা করেছি।

এলাকার লোকজনের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দানের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারিনি বলে আমি কখনোই নিরাশ হয়ে বসে ছিলাম না। আমি দ্বীর্ঘ দিন ধরেই মনে প্রাণে চিন্তাভাবনায় ছিলাম, কিভাবে এলাকার আপামর জনসাধারণের খেদমতে নিজেকে সম্পৃক্ত করা যায়। এই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমি আমার সীমিত উপার্জন দিয়ে সৎ পথে থেকে সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে সামগ্রীকভাবে এলাকাবাসীর উন্নয়নে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করি এবং এ ক্ষেত্রে আমি ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ডকেই বেছে নেই। আমি সুদীর্ঘ সময় ধরে ভেবে চিন্তে অবশেষে এমন একটি ক্ষেত্র বেছে নেই, যেটি করলে সামাজিকভাবে এলাকার সামগ্রীক উন্নয়ন ঘটবে এবং ইহোকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তির সম্ভাবনা থাকবে। এ ধরনের চিন্তাভাবনা ও আশা আকাঙ্ক্ষার সূত্র ধরে আমি এলাকায় একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়ত করি। যে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে সৃষ্টি হবে অগণিত আলোকিত মানুষ ও দক্ষ জনসম্পদ। এছাড়া সেখানে থাকবে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ পাকের পবিত্র মসজিদ ঘর এবং এলাকার ধর্মপ্রাণ সর্বসাধারণের জন্য থাকবে ইসলামী পাঠাগার। উল্লেখ্য প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে প্রতি বছর বেড় হবে শত শত আলেম ওলামা। যারা ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন শিক্ষা লাভ করে তা বুকে ধারণপূর্বক মহান আল্লাহ পাকের বানী প্রচার ও প্রসার ঘটিয়ে পৌঁছে দিবে প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকের দোরগোড়ায়। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত পবিত্র মসজিদ ঘর হবে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ইবাদতের উত্তম পরিবেশ এবং ইসলামী পাঠাগারটি হবে এ অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকগণের ধর্মীয় জ্ঞান চর্চার কেন্দ্রবিন্দু। এ থেকেই আমি আমার জন্মস্থান ঠাকুরগাঁও জেলাধীন বালিয়াডাঙ্গী অন্তর্গত রত্নাই স্কুলহাট এলাকায় দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তবে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা ক্রয় করতে গিয়ে আমাকে মানব সৃষ্ট বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যার কারণে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে জমি ক্রয় করতে অনেকটা বিলম্বিত হতে থাকে। এভাবে বেশ কিছুদিন সময় ক্ষেপণ হতে থাকলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি, এলাকার ভদ্রবেশী দু/একজন দুষ্ট প্রকৃতির ব্যক্তি সংগোপনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে যার কারণে জমি ক্রয়/বিক্রয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে । এ বিষয়টি আমি অনুধাবন করতে পেরে তাদের ( দুষ্ট ব্যক্তি) কাউকে কোন কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজের মতো করে আল্লাহ পাকের উপর ভরসা রেখে অতিগোপনে আরো পছন্দনীয় ও সর্বজন স্বীকৃত জায়গার অনুসন্ধান করতে থাকি। এক পর্যায়ে আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে বিশ্বস্তসূত্রে সর্বজন পছন্দনীয় কাঙ্খিত জায়গার সন্ধান পেয়ে যায় এবং সেই কাঙ্খিত জায়গা ক্রয় সূত্রে/ বদলি সূত্রে আমার নিজ নামীয় জায়গার সাথে একীভূত করণের জন্য তৎপর হই।

অতঃপর আমি আমার এক বিশ্বস্ত ব্যক্তি’র সঙ্গে আলোচ্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার আগ্রহের বিষয়ে আলোচনা করি এবং কাঙ্খিত জায়গা ক্রয়ের ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির সহযোগিতা কামনা করি। সবকিছু শুনে ও আমার মনোভাব বুঝে উক্ত ব্যক্তি আমাকে কাঙ্খিত জমি ক্রয়ে/ বদলি সূত্রে একীভূত করণে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এর কিছুদিন পরেই উক্ত ব্যক্তি আমাকে মোবাইল ফোনে জানান, জমি ক্রয় সূত্রে/ বদলি সূত্রে একীভূত করণের বিষয়ে সবকিছু ঠিকঠাক করা হয়েছে,যে কোন সময় জমি দাতা’গণ জমি ক্রয় সূত্রে/ বদলি সূত্রে রেজিস্ট্রি দিতে প্রস্তুত। উক্ত সংবাদ পেয়ে আমি ছুটি নিয়ে নিজ বাড়িতে আসি এবং জমি বিক্রেতা/জমি বদলী দাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে একদিনেই পাঁচটি দলিল সম্পাদন করি। পরদিন আরো তিনটি রেজিস্ট্রি দলিল দ্রুততার সাথে সম্পাদন করে ফেলি। এরপর পর্যাক্রমে আরো তিনটি রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করে সর্বমোট ৭৯’৭৮ শতাংশ জায়গা ক্রয়/বদলি সূত্রে একিভুত করা হয়। ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর মধ্যে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার স্বপক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়।

এ অবস্থায় আমি ছুটি নিয়ে নিজ জন্মস্থান রত্নাই স্কুলহাট রায় এবং ২২ মে ২০২১ খ্রিঃ তারিখ অনানুষ্ঠানিকভাবে রত্নাই উদয়পুর দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে একটি সভার আয়োজন করি। উক্ত সভায় এলাকার সর্বস্তরের শতাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লির উপস্থিতিতে ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন জায়গায় দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আমি প্রস্তাব উত্থাপন করি। এলাকাবাসী উক্ত প্রস্তাব শুনে আনন্দ ও উচ্ছাস
প্রকাশ করেন এবং উপস্থিত সবাই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। অতঃপর ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিঃ আমার সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকগণের আলোচনা,পর্যালোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানের নাম আমার পরলোকগত পিতা মরহুম দবির উদ্দিন এর নামানুসারে নাম “দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স” রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে রত্নাই উদয়পুর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের প্রস্তাবিত উন্মুক্ত স্থানে আমার নিজ নামীয় জায়গার সাথে ক্রয় সূত্রে/ বদলি সূত্রে একীভূত করা জায়গার উপর আলোচ্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত এলাকার আপামর ধর্মপ্রাণ মুসলিম নাগরিকগণের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স” পরিচালনার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে ১০১ ( একশত এক) সদস্য বিশিষ্ট সাধারণ পরিষদ, ১১ (এগারো) সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ এবং ২১ (একুশ) সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়। অতঃপর প্রস্তাবিত জায়গার উপর আলোচ্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রথমত মেঝে পাকা দু’কক্ষ বিশিষ্ট শ্রেনী কক্ষের একটি টিনসেড ঘর এবং প্রসাশনিক কার্যালয় সহ দু’কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমি-পাকা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়।
অপর দিকে ৩ ( তিন) জন মাওলানা শিক্ষক ও
একজন অফিস সহকারী নিয়োগ দানের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১০৮ ( একশত আট) জন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি নিয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষাদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। এভাবেই “দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স” এর শুভ সূচনা হয়। যেটি এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি একটি বাস্তব ও দৃশ্যমান দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স”। উল্লেখ্য প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু আমি নিজ উদ্যোগে এবং একক প্রচেষ্টায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি, সেহেতু প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা ও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমাকে সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। এজন্য আমি এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।
প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান”দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স “এর উত্তরোত্তর উন্নতি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। একইসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক যেন প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল ও মঞ্জুর করে নেন, এজন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করছি। ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ জমির উদ্দিন
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) বাংলাদেশ পুলিশ, আরআরএফ, রংপুর।
এবং
প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা
দবিরিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা কমপ্লেক্স
রত্নাই স্কুলহাট, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 English Bangla
Theme Customized BY WooHostBD