নীলফামারীতে টানা ৪৮ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে গরু চোর চক্রের কুখ্যাত চোর তরিকুল ইসলামসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জলঢাকা থানা পুলিশ। তারা গত দেড় বছরে ওই উপজেলায় ৪৮ টি গরু ও ৫০ টি ছাগল চুরি করে।
আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে নীলফামারী জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং এ এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোঃ গোলাম সবুর। তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শালনগ্রাম বটতলী এলাকা হতে ছয়টি গরু চুরির ঘটনায় থানায় একটি মামলা রুজু হয়।এরপর অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সাথে যুক্ত অন্যান্যদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা উক্ত চুরির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করে। আসামী তরিকুল, শংকর এবং ছাদেকুল জানায় যে, তারা প্রথমে জলঢাকা থানা এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারি বাগান থেকে সুপারি চুরি করে জলঢাকা বাজারে এক ব্যক্তির দোকানে বিক্রি করতো। উক্ত বাজারে তাদের সাথে আসামী উমর ফারুক, রাজ্জাক এর সাথে পরিচয় হয়।
পরে তারা একত্রিত হয়ে জলঢাকা থানার বিভিন্ন এলাকা হতে দিনের বেলা ছাগল চুরি করে আসামী তরিকুলের ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা প্রায় ৪০/৫০ টি ছাগল চুরি করে। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আরো কিছু চোরের পরিচয় হয় এবং তারা গরু চুরি করার পরিকল্পনা করে। আসামী শংকর এর মামার বাড়ী বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম এলাকায় হওয়ায় সে সহযোগী আসামী ছাদেকুল সহ ভ্যানে করে তার মামার বাড়ী থেকে আশপাশ এলাকায় কোন বাড়ীতে গরু আছে এটির সন্ধান করতো এবং সহযোগী অন্যান্য আসামী সহ সেই বাড়ী গুলোতে গরু চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক তারা গত দেড় বছরে সাইডনালা, শালনগ্রাম, বারোগোপাল এলাকায় মোট ৪৮ টি গরু চুরি করে।
আসামী তরিকুল, শংকর, ছাদেকুল, রাজ্জাক জানায় তাদের আরো কয়েক জন সহযোগী সহ তারা বিভিন্ন বাড়ী থেকে গরু বাহির করে নির্জন স্থানে অপেক্ষা করতো। আসামী তরিকুল মোবাইল ফোনে আসামী উমর ফারুককে কল দিয়ে ডাকলে উমর ফারুক মিনি ট্রাক নিয়া কাছাকাছি রাস্তায় আসা মাত্রই তারা সকলে মিলে চোরাই গরু গুলো ট্রাকে তুলে দিতো। এভাবে তারা বিভিন্ন রোড দিয়ে চোরাই গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল। আসামী তরিকুল, শংকর, ছাদেকুল গন ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়। আসামীদের দেয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই পূর্বক গরু ও গরু পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধার সহ অন্যান্য আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার অব্যহত আছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) মোঃ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নীলফামারী-জলঢাকা সার্কেল মোঃ মোস্তফা মঞ্জুর পিপিএম সেবা, ডিআইও ওয়ান (ভারপ্রাপ্ত) আকরাম আলী, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুক্তারুল আলম সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রোনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা।