1. admin@englishbangla24.com : admin :
মহাকাশের অগ্রণী প্রাণী লাইকার কাল্পনিক জবানবন্দী - English Bangla 24
মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

মহাকাশের অগ্রণী প্রাণী লাইকার কাল্পনিক জবানবন্দী

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৭১ Time View

আজ ২৬এ আগস্ট, বিশ্ব সারমেয় দিবসে আসুন স্মরণ করি লাইকাকে, যার আত্মবলিদান দিয়ে শুরু হয়েছিল মানবজাতির মহাকাশ গবেষণা।

মহাকাশের অগ্রণী প্রাণী লাইকার কাল্পনিক জবানবন্দী(১৯৫৭ সালের ৩ রা নভেম্বর)
___________________________________
______________
১৯৫৪ সালে রাশিয়ার মস্কোর রাস্তায় আমি জন্মেছিলাম। মা,ভাই-বোনেদের সাথেই কাটছিল আমার বালখিল্য জীবন। কিন্তু আমি ছিলাম সবার থেকে আলাদা। আমার যেমন ছিল গায়ের জোর,তেমনি ছিল দম। আমার সমসাময়িকরা আমার কাছে ছিল নস্য। কাজেই ধীরে ধীরে সকলে আমাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করলো। এইভাবে বেশ চলছিল। কোথ্থেকে একদিন কিছু লোক এসে আমাকে খাবারের লোভ দেখিয়ে ধরে নিয়ে গেলো। আমি বুঝতে পারলাম, যে আমার শক্তি, দম, গুণাবলী এগুলো আমার কাল হলো। ওরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটা খাঁচায় ভরে দিলো। দেখলাম আমার আগে আরও অনেকেই ওখানে বন্দী ছিল।
প্রথমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই খাতির যত্ন শুরু হলো। কত রকমের খাবার। আরাম আয়েশের সমস্ত রকম ব্যবস্থা তৈরি ছিল। এইভাবে কদিন চলার পর ওরা আমাদের ধীরে ধীরে নানান রকম কায়দাকানুন শেখাতে শুরু করলো। কত রকমের ট্রেনিং, নাকে তুলো গুঁজে, মুখে দড়ি দিয়ে বেঁধে, না খেতে দিয়ে কিছু সময় ওরা আমাদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যেত। ভয়ে অনেকেই পালিয়ে গেল। আমি শত চেষ্টা করেও ওখান থেকে পালাতে পারলাম না। উল্টে ধীরে ধীরে আমি ওদের খুব পছন্দের পাত্র হয়ে উঠলাম। ট্রেনিং চলার পাশাপাশি ওরা আমাকে খুব যত্ন করতে লাগলো।তাই আমি ও আর পালাবার চেষ্টা করিনি।
এইভাবে চলতে চলতে একদিন সেই দিনটি এলো।১৯৫৭ সালের ৩রা নভেম্বর।আগের দিন থেকে নানান রকম পোশাক আশাকে আমাকে সাজানো হলো। সকলের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলাম আমি।আমাকে দেখার জন্য সমস্ত পৃথিবীর মানুষ মস্কোতে জড়ো হয়েছিল। ক্রমে এলো সেই সন্ধিক্ষণ। সকলে মিলে আমাকে স্পুটনিক ২ নামের একটা মহাকাশযানে জোর করে তুলে বেধে দিলো। তখনও পর্যন্ত আমি বুঝতে পারিনি কি হতে চলেছে আমার সঙ্গে।
হঠাৎ বিকট আওয়াজে আমি চমকে উঠে যেই পালাবার জন্য মরনপণ চেষ্টা করলাম, দেখলাম শরীরটা এমনভাবে শক্ত খুঁটির সাথে আটকানো আছে যে আমার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবশিত হলো।
তারপর অসম্ভব রকমের ধোঁয়ায় চারদিকে ভরে গেল।আমি ধীরে ধীরে উপরে উঠতে লাগলাম।প্রথমটায় কি মজাটাই না হচ্ছিল।ভাবছিলাম ফিরে এসে সকলকে গল্প শোনাব। কিন্তু কয়েক মুহূর্তে আমার সকল আনন্দ, ইচ্ছা কর্পূরের মতো উবে গেলো। যান যতই ওপরে উঠতে থাকে ততই তীব্র শ্বাসকষ্টে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। শরীরে নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করছি।
আমি বুঝতে পারলাম মানুষ নিজের স্বার্থে আজ আমাকে গিনিপিগ করেছে।
কিন্তু এ আমি কোথায় পৌছালাম। এ যে পৃথিবীর কক্ষপথ। কিন্তু অক্সিজেনের অপরিমিত ব্যবস্থা করে আমাকে কেন পাঠানো হলো। মানুষ কে জবাব দিতেই হবে। অপরিসীম কষ্ট সহ্য করে শেষে আমার মৃত্যু হলো।
এই কষ্টের মৃত্যু তো আমার পাওনা ছিল না।মানুষ নিজের স্বার্থে আমাকে বলির কুকুর করলো।
সবথেকে আশ্চর্যের ২০০২ সাল পর্যন্ত আমার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ গোপন করা হলো কেন? পশু প্রেমীদের ভয় না অন্য কোন কারণ।
তবে এটা ভেবে আনন্দ পাই যে আমি মনুষ্যেতর প্রাণী হয়ে মানুষকে পথ দেখাতে পেরেছি।
২০০৮ সালে রাশিয়ার মস্কোতে আমার কী সুন্দর একটা মূর্তি তৈরি হয়েছে। তোমরা মানুষরা একটিবার গিয়ে দেখে এসো।
আজ মৃত্যুর পর আমি গর্বিত।

আমি লাইকা। আমি আজকের দিনে ১৯৫৭ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছেছিলাম।আমিই প্রথম।।
সমগ্র পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করেছিলাম।
তোমরা মানুষরা অন্তত মনে রেখো আমাকে।
ধন্যবাদ।। 🙏

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 English Bangla
Theme Customized BY WooHostBD